প্রস্তুতি
পরিবার নিয়ে নতুন জায়গায় ঘুরে
বেড়াতে কার না ভাল লাগে। আমার ইচ্ছা করে প্রতি বছরের দিন কয়েকের জন্য কোথাও বেড়িয়ে
আসি। তবে টাকা পয়সা, সময় আর স্বাস্থ্য এই তিনের সমন্বয় না হলে আর ঘোরা হয় না। আমার
ছেলে তো সব সময় তা তা (বাইরে) ঘুরতে চায়। এবার স্বামীও বলল, চলো কোথাও ঘুরতে যাই। বাজেট হিসাব করে দেখলাম, অন্য দেশ বলতে ভারত ছাড়া আর
কোথাও যাওয়া সম্ভব না।
এর আগে শিলিগুড়ি আর দার্জিলিং
গিয়েছিলাম, এবার তাই ঠিক করলাম কোলকাতা ঘুরে দেখব। বহুদিন অবিভক্ত ভারতের
বৃটিশ রাজ্যের রাজধানী ছিল, দেখি এখন কি অবস্থা।
যেহেতু ছেলে ছোট তাই বাই রোডে
যাওয়ার চিন্তা বাদ দিলাম। প্লেনে গেলে খরচ বেশি তবে খুবই অল্প সময়ে, আরামে আর বিনা ঝামেলায় যাওয়া যায়।
নতুন জায়গায় যাচ্ছি, তাই যতদূর সম্ভব সবার পরামর্শ সংগ্রহ করা শুরু করলাম। কে যেন বলল, কিং ফিসারের বিমান বালারা ছোট পোশাক পরে, স্বভাবত:ই আমার স্বামী বিশেষ আগ্রহী হয়ে উঠলেন, তবে সময়ের সাথে সাথে তাদের বিমান ভাড়া বেড়ে যাওয়ায় শেষ পর্যন্ত আর যাওয়া হয়নি।আমরা গিয়েছিলাম জেট এয়ার ওয়েজে। ওখানে ২ বছরের ছোট শিশুদের ডিসকাউন্ট দেয়া হয় জেনে খুব খুশি হয়েছিলাম। পরে দেখলাম মাত্র ১০০০টাকা কম রেখে সিট আর খাওয়া দেয়া হয়না। এরচেয়ে সিট নিয়ে আরাম করে যাওয়ায় হয়তো ভাল ছিল।
আমি চেয়েছিলাম টুরিস্ট সিজন শুরুর আগেই যেতে কিন্তু অনলাইনে ফরম পূরনের সময় ছেলের একটা তথ্য ভুল দেয়ায় পুনরায় আবার জমা দিতে হলো। ফলে ভিসা পেতে দেরি হয়ে গেল। আমরা গেলাম অক্টোবরে।
বিমান বন্দর
বিমানে গিয়েছিলাম যাতে যাতায়াতে ছেলের কোন কষ্ট না হয়। তবে বিমানের প্রচন্ড শব্দের কথা ভুলে গিয়েছিলাম। টারমিনাল থেকে বের হয়ে বিমানে পৌছানোর সময় অন্যান্য বিমানের প্রচন্ড শব্দে শাফিন (আমার ছেলে) ভয় পেয়ে গেল। ছোট ছোট দু হাত দিয়ে কান ধরে রাখল। বিমানে উঠেও শব্দ গেল না। বেচারার খুবই কষ্ট হয়েছে।
কোলকাতার বিমান বন্দর, ছোট একটা বিমান বন্দর। অধিকাংশ প্লেনই দেখলাম আভ্যন্তরিন চলাচলের জন্য। আমার ছেলে
দুবারই (যাওয়ার সময় আর আসার সময়) প্লেন নামার ঠিক আগে ঘুমিয়ে পরেছে। ঘুম থেকে উঠে দেখে
আমরা লাইনে দাড়িয়ে আছি চেকিংয়ের জন্য। ও এরপর সবাইকে বলে বেড়ালো, আমি একটু ঘুমিয়েছি, আর প্লেনটা ধপ করে নিচে পরে গেছে।
বিমান বন্দরে আমাদের লাইনটা
বড় হওয়ায় পাশে নতুন একটা রো করতে বলছিল বিমান বন্দরের কর্মচারীরা। একজন আমাদের দিকে
তাকিয়ে এদিকে আসুন বলতে, আমার স্বামী এগিয়ে গেল। কিন্তু ভদ্রলোক আর কাউকে বলেছিল যেতে, সে আমার স্বামীকে অত্যন্ত রুড় ভাষায় ধমকে বলল, কেন লাইন টপকে এসেছেন, যান লাইনে যান। শুরুতেই এদের ব্যবহারে মনটা দমে গেল। এরপর আবার ফরমে ভুল করায় ফয়সালকে
(আমার স্বামী) আবার পাঠালো সব ঠিক করতে। বেচারা তাড়াহুড়া করতে যেয়ে আরো দেরি করতে লাগল।
আমি শাফিনকে (আমার ছেলে) কোলে নিয়ে অপেক্ষা করতে থাকলাম। একটু পর উর্ধতন কোন কর্মকর্তা
এসে অধিনস্তদের জিগ্যেস করলেন, বাচ্চা নিয়ে ওনাকে দাড় করিয়ে রেখেছো কেন? এদের কাজ শেষ করো আগে। ওরা তাড়াতারি ফয়সালের হাতের কাগজ নিজেরাই পুরন করে আমাদের
ছেড়ে দিল। বেচারা ফয়সাল এরপর থেকে যে কোন ফরম পূরনের মামলা আসলেই আমাকে এগিয়ে দিত।
হোটেল থেকে শুরু করে সব জায়গায়ই আমিই ফরম সামলালাম, কোন ঝামেলা ছাড়াই। বিমানে আরেকটা ছোট দুর্ঘটনা হলো। আমাদের সুটকেসটা ভেংগে গিয়েছিল। এটা আমার বিয়ের সুটকেস ছিল। একটা স্মৃতিময় জিনিস নষ্ট হয়ে গেল।
আমরা বের হবার সময় বিমান বন্দরের
মানি ট্রান্সফার থেকে কিছু ডলার ভাংগিয়ে নিলাম। যারা কোলকাতায় যাবেন, তাদের প্রতি অনুরোধ এমন কাজ করতে যাবেন না। বিমান বন্দরে অনেক কম টাকা দেয়, ডলারের বিনিময়ে।
ঢাকায় বিমান বন্দর
থেকে বের
হয় ট্যাক্সি
নিয়ে কি
রকম বিরম্বনায়
পরতে হয়
সেটা আমরা
সবাই জানি। কোলকাতায়
দেখলাম সে
রকম কোন
অসুবিধা হলো
না।
বিমান বন্দরের
ভিতর থেকে
ট্যাক্সি ঠিক
করা যায়। ভাড়াও
বেশি নেয়
না।
বের হবার
পর টোকেন
দেখে নির্ধারিত
ট্যাক্সিতে কাংখিত যায়গায় যাওয়া যায়।
ফেরার পথে হোটেল
থেকেও ট্যাক্সি
নিয়ে কোন
সমস্যা হয়নি। হোটেলের
ম্যানেজারকে বলে রেখেছিলাম। ভোর
৩.৩০
এ ট্যাক্সি
এনে রাখতে। ঠিক
সময় মতো
ট্যাক্সি পৌছে
গিয়েছিল।
ভাড়া নিয়েও
সমস্যা হয়নি।
ট্যাক্সি:
কোলকাতার এ্যাম্বাসেডর ট্যাক্সির
কথা কে
না জানে। চড়তে
বেশ আরাম
আর বেশ
প্রশস্ত।
ফলে আরাম
করে ৩
জন পিছনে
বসা যায়। ওখানে
ট্যাক্সি বেশ
সহজেই পাওয়া
যায়।
আর আগে
থেকে ফিক্স
ভাড়ায় যাওয়া
যায়।
অন্য দেশের
মানুষ বুঝতে
পারলে ভাড়া
বেশি চায়। তবে
বের হবার
আগে হোটেলের
ম্যানেজারকে আগেই ভাড়া কত হতে
পারে জিগ্যেস
করে নিলে
আর বিরম্বনায়
পরতে হয়
না।
ফয়সাল (আমার
স্বামী) প্রথম
দিকে চক্ষু
লজ্জায় পরে
ভাড়া বেশ
বেশি বেশি
করে দিচ্ছিল। পরে
টাকা কমে
যাওয়ায় সাবধানি
হয়েছে।
হোটেল:
কোলকাতায় প্রচুর বাংলাদেশি
যায় নিয়মিত। বিশেষ
করে আমাদের
দেশের হিন্দু
ধর্মালম্বিদের অধিকাংশের আত্মীয় আছেন কোলকাতায়। তবে
শুধু বাংলাদেশিদের
থাকার জন্য
বিশেষ ভাবে
হোটেল পাড়া
গড়ে উঠেছে
সম্ভবত: চিকিৎসা
সেবা নেয়ার
জন্য যারা
যান তাদের
জন্য (আমার
ধারনা ভুলও
হতে পারে)।
ট্যাক্সিওয়ালাদের সাথেও হোটেলের
চুক্তি থাকে
সুতরাং আমাদের
ট্যাক্সি আমাদের
একটা বিশেষ
হোটেলে নিয়ে
গেল।
দেখতে খুবই
সুন্দর ভাড়াও
খুব বেশি
না।
তবে আমাদের
বাজেট আরও
কম হওয়ায়
আমরা অন্য
হোটেলে উঠলাম।
আমরা উঠলাম হোটেল
প্যারাডাইস ইন্টারন্যাশনাল।
বাইরে থেকে
দেখতে ভাল
না।
ঢোকার পরও
যথেষ্ট পরিস্কার
মনে হলো
না।
তবে রুম
ভাল, পরিস্কার,
বড়, এসি,
টিভি, ফ্রীজ,
গেইজার আছে। বিছানা,
সোফা, আলমিরাহ,
ড্রেসিং টেবিল
বেশ ভাল
আর পরিস্কার। ওখানে
কি খাব
বলে দিলে
পাশের মুসলিম
হোটেল থেকে
খুব কম
দামের খাবারও
এনে দেয়,
যখন তখন
চাও আনানো
যায়।
জানালা দিয়ে
কোলকাতার নিয়মিত
জীবন যাত্রাও
দেখা যায়। লিফটও সব সময় চলে।
হোটেলের রিসেপশনিস্ট শুরুতে
পুরো টাকা
এ্যাডভান্স এ দেবার জন্য খুব
পীড়াপীড়ি করেছিল। হয়তো
ভেবেছিল শপিং
করে সব
টাকা শেষ
করে দিব,
পরে আর
বিল ঠিক
মতোন দিব
না।
এখানে হোটেল রুম
সম্ভবত: সাড়া
বছরই পাওয়া
যায়।
আগে থেকে
বুকিং না
দিলেও চলে। নিজে
দেখে, দরদাম
করে (দরদাম
করে ভাড়াও
কমানো যায়)
হোটেল ঠিক
করাই ভাল।
যেসব হোটেলের চেহারা
ভাল না,
সেগুলো সর্বোচ্চ
১০০০টাকা থেকে
নিচে ৫০০টাকা
বা আরও
কমে পাওয়া
যায়।
একটু ভাল
হোটেলে উঠতে
হলে দৈনিক
১১০০ কমপক্ষে
দিতে হবে। এসব
ক্ষেত্রে ১৫০০টাকার
নিচে পাওয়া
মুশকিল।
নিউমার্কেটের পাশের এই
রাস্তাগুলোতে সাড়ি সাড়ি হোটেল।
ফ্রী স্কুল
স্ট্রিট, সদর
স্ট্রিট ইত্যাদি। একটু
ঘুরে বেছে
নিতে হবে। যত
ভিতরের দিকে
যাবেন ভাড়া
তত কমবে।
মানি এক্সচেন্জ:
যেহেতু টু্রিস্ট এলাকা,
তাই জায়গায়
জায়গায় মানি
একচেন্জ আছে। আপনি
যখন খুশি
ডলার ভাংগিয়ে
নিতে পারেন। আর
সাথে সব
সময় পাসপোর্ট
রাখবেন (এটা
যে কোন
দেশের জন্য
প্রযোজ্য)।
তাহলে মানি
রিসিটও দিয়ে
দিবে।
রাস্তাঘাট:
কোলকাতার কোন কোন
রাস্তা বেশ
নোংড়া।
আমি বেশির
ভাগ জায়গায়
কোন ডাস্টবিন
ব্যবহার করতে
দেখিনি।
সব ময়লা
রাস্তার ড্রেনে
ফেলে।
তারপরও রাস্তা
তুলনামুলক ভাবে পরিস্কার। কারন
ময়লা নিয়মিত
পরিস্কার করা
হয়।
রাস্তাও একবাও কোন
জ্যাম পাইনি। কারন
গুলো হয়তো:
১। পাতাল
রেল: এটা
শহরের মাটির
নিচে সরাসরি
চলে।
ফলে বিল্ডিং
বা অন্যান্য
কোন কারনে
ঘুরে যেতে
হয়না।
কোন জ্যাম
নেই কয়েক
মিনিটেই পুরো
কলকাতার অ্ন্য
প্রান্তে চলে
যাওয়া যায়। এখানেও
ভিড় বা
ঢাক্কঢাক্কি নেই। কয়েক মিনিট
পর পরই
ট্রেন।
যার যেখানে
খুশি যাচ্ছে।
২। ট্রেনের
লাইনগুলো একটাও
রাস্তা বন্ধ
করেনি, মানে
একটাও রেলগেট
নেই যে
জ্যাম হবে। ট্রেনগুলো
ফ্লাই ওভারের
মতোন রাস্তার
উপর দিয়ে
চলে গিয়েছে।
৩। অনেক
গুলো ফ্লাই
ওভার।
ফলে শহরে
বড় কোন
মোড় নেই
যে গাড়ি
দাড়িয়ে থাকবে
(৭ রাস্তা
বা ১০
রাস্তার মোড়)।
৪। গাড়ি
গুলো সাধারনত:
ট্রাফিক আইন
মেনে চলে। কাউকে
লাঠি হাতে
সব সময়
মারতে হয়
না।
কোলকাতার রাস্তায় আমি
ভাংগাচোড়া দোমড়ানো মোচরানো, রং ওঠা
গাড়ি দেখিনি। কারন
ওরা রাস্তায়
গাড়ি নিয়ে
মারামারি করে
বেড়ায় না
যেমন ঢাকার
বাস আর
টেম্পো (বন্ধু
পরিবহন) গুলো
করে।
ইদানিং প্রাইভেট
গাড়িও কম
যায় না।
দেওয়ালী:
কোলকাতায় আমরা গিয়েছিলাম
দেওয়ালীর দিন। আমি
ঢাকা শহরে
দেখেছি, হিন্দু
ধর্মালম্বীরা এই দিনে সাড়া বাড়ি
প্রদিপ দিয়ে
সাজায়।
বিশেষ করে
জানালের পাশে,
দরজার পাশে। কোলকাতায়
তেমন কোন
সাজ সজ্জা
দেখলাম না। কেউ
কেউ খুব
বেশি হলে
মরিচ বাতি
দিয়ে একটু
খানি সাজিয়ে
রেখেছে।
পরবর্তি কয়েকদিন পূজা
মন্ডপে জোড়ে
জোড়ে হিন্দী
গান বাজাতে
দেখেছি।
খারাপ লেগেছে,
যখন দেখেছি
শহরের চিড়িয়া
খানার পাশে
বিকট শব্দে
সাড়াক্ষন হিন্দি
তালের গান
বাজানো।
পশুপাখিদের জীবন কিভাবে কাটে তখন
কে জানে। তবে
কোথাও বাংলা
গান শুনিনি।
সিনেমা:
কোলকাতার মানুষ (হয়তো
পুরো ভারত
বর্ষে) সিনেমা
খুব দেখে। যে
কোন হলে
টিকিট বিক্রি
হতে দেরি
হয় না। সব
সময় দেখা
যায় টিকেট
লাইন ধরে
কাটছে মানুষ
আর একটু
পর টিকেট
নাই।
যেখানে টিকেটের
দাম ৩০০টাকা
সেখানেও টিকেট
পাওয়া যায়
না, যেখানে
৫০টাকা সেখানেও
না।
এজন্য হয়তো
ওদের সিনেমার
ব্যবসা লাভ
জনক।
আমি যখন
ছিলাম তখন
কোথাও বাংলা
(মানে টালিউডের,
কোলকাতার বাংলা
সিনেমা) সিনেমা
চলতে দেখিনি। সব
জায়গায়ই হিন্দী
সিনেমা বা
কোথাও ইংলিশ
সিনেমা চলেছে।
নিউ মার্কেট:
বাংগালী হোটেল পাড়ার
ঠিক পাশেই
হলো নিউমার্কেট। হোটলে
ঢোকার সময়
বা বের
হবার সময়
বা সাড়াদিনও
আপনি শপিং
করতে পারেন। এখানে
যা ভাল
পাবেন তা
হলো শাড়ি,
কসমেটিকক্স (কম দামে পাবেন), ইমিটেশনের
জুয়েলারী, থ্রী পিস, বাচ্চাদের ড্রেস। বেশ
কিছু ব্র্যান্ডের
জিনিসের দোকান
আছে।
ভাল লাগলে
নিতে পারেন।
কোলকাতা থেকে যা
কিনবেন না:
ঔষধ, বাচ্চাদের খেলনা,
শোপিস ইত্যাদি।
সোরাম:
নিউমার্কেট এলাকা থেকে
৩০টাকা ট্যাক্সিতে
নিয়েছিল সোরামে
যেতে।
এটাকে বাংলাদেশের
মিনি বসুন্ধরা
সিটি বলতে
পারেন।
কোলকাতার এলিট
লোকজন এখানে
যাওয়া আসা
করেন।
এখানে হিরার
কালেকশন ভাল। চকলেটের
দোকানও খুব
সুন্দর।
বেশ কিছু
ব্রান্ডের জুতা আর জামার কালেকশনও
আছে।
তবে এখানকার
ফুড কোর্ট
হয়তো সবচেয়ে
বেশি চলে। কি
নেই, ইরানীয়ান
ফুড, ফ্রান্সের
খাবার, সবই
পাওয়া যায়। তবে
সবচেয়ে ভাল
হলো এখানকার
সিনেপ্লেক্স। টিকেটের দাম বেশি
হওয়ায় বেশ
বড় ঘরের
ছেলেমেয়েই সিনেমা দেখতে আসে এখানে। আমি
সব মেয়েকে
জিন্স পরতে
দেখেছি এখানে
আর সবাই
ওজনে একটু
বেশি।
ফাস্ট ফুডের
প্রভাব হয়তো
সব দেশেই
আছে।
আমি স্বামী আর
পুত্রকে নিয়ে
এখানে দেখলাম
ঐশ্বরিয়ার ছবি "জোরকা ঢাক্কা হায়
জোরোসে লাগা,
সাদি বান
গিয়ে উমর
কয়েদকি সাজা"। তখন
গোলমাল ৩
চলছিল।
গোলমাল ২
আমার স্বামীর
ভাল লাগেনি
দেখে ও
নতুনটা আর
দেখতে চাইল
না।
পরে অনেক
আফসোস করেছে। আমার
ছেল ভুল
করে ওর
জুতা হলে
রেখেই চলে
এসেছিল।
এখানে আবার
টিকেট ছাড়া
সিনেপ্লেক্সের ফ্লোরে উঠতেই দেয় না। তারপরও
সিকিরিটি গার্ডকে
বলে জুতা
উদ্ধার করলাম।
ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল:
কোলকাতায় গেলে যা না দেখলেই না।
ব্রিটিশরা তাজমহলের অনুকরনে কিছু একটা বানাতে চেয়েছিল। তাই বানিয়েছিল ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল।
এটাও তাজ মহলের মতোন স্বেত পাথরে তৈরি। দেখতেও সুন্দর।
এখানে সবাইকে একটা কথা বলে রাখি
বিশেষ করে যাদের ছোট বাচ্চা আছে তাদেরকে বলছি, জায়গাটা অনেক বড় সময় নিয়ে ঘুরতে হবে।
আর ভিতরে খাবার কোন ব্যবস্থা নেই, পানিও নেই। তাই আপনাকে স্ন্যাকস, পানি বা সফট ড্রিংস
এর বোতল ব্যাগে ভরে নিতে হবে। দেখাদেখি হলে পরে পানি কাছে ঘাসের উপর বসে মন ভরে খেয়ে
নিবেন। অবশ্যই জায়গা ময়লা করবেন না।
শুরুতেই আপনার চোখে পরবে, সুন্দর
বিশাল বাগান। এরপর ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের সুদৃশ্য কারুকার্য করা ভবন। বাইরে থেকে ঘুরে
ঘুরে দেখতে পারেন। ভিতরে গেলে সবার আগে হল রুম। তার মাঝে রানী ভিক্টোরিয়ার স্ট্যাচু।
চারপাশে এখন ছবি রেখে গ্যালারী বানানো হয়েছে। মাঝে মাঝে বসার কাঠের বেন্চের ব্যাবস্থা।
পা ব্যাথা হয়ে গেলে বসে নিবেন। উপরে উঠেও গ্যালারী পাবেন। নীচে এক অংশ শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত
করে হয়েছে দেখেছিলাম।
বিকালে ভবনের বাইরে দেখলাম একদল
বাদক বাজনা বাজাচ্ছে। ভেবেছিলাম শাফিন পছন্দ করবে। কিন্তু ও মাঠে দৌড়াতে আর পাখি তাড়াতে
বেশি পছন্দ করলো।
গড়ের মাঠ:
বিশাল এক মাঠ। এই
মাঠ দেখলে
মনে হয়
শহরে এরকম
একটা মাঠ
থাকলেই হয়,
পুরো শহরবাসীর
জন্য একটা
মাঠই যথেস্ট। মাঠের
কোন জায়গায়
ঘোড়া চড়ে
বেড়াচ্ছে।
একপাশ দিয়ে
ট্রাম চলছে। কোথাও
ফুটবল খেলা
হচ্ছে কোথাও
ক্রিকেট, কেউ
মাঠে শুয়ে,
বসে রেস্ট
নিচ্ছেন।
বিকালে মাঠ
বেশ জমে
ওঠে নানা কর্মকান্ডে।
ঘোড়ার গাড়ি:
ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল থেকে বের
হলেই সামনে দেখবেন সাড়ি সাড়ি ঘোড়ার গাড়ি। কোন কোনটা আবার বেশ বাহারী সাজে সাজানো। ঘোড়ার
গাড়িতে ১০০টাকা নিয়েছিল, পুরো গরের মাঠটা ঘুরে আসতে, অনেক দামাদামি করে দাম কমানো যায়নি।
আর এটা হলো মাঠ ঘুরে দেখা সব চেয়ে আরামেরর ব্যবস্থা। আমাদের ঘোড়ার গাড়িটা আরেকটা ঘোড়ার
গাড়ির সাথে কমপিটিশনে লেগে গিয়েছিল। আমি বললাম দরকার নেই, ধীরে ধীরে চালান। যতক্ষন
ঘোরা যায়, ততই ভাল লাগে। এখানে একটা কথা বলে রাখি, ঘোড়ার গাড়ির চালক হতে, টাক্সি ড্রাইভার,
রিক্সাওয়ালা সবার সাঠে হিন্দিতে কথা বলতে হয়েছিল। ওরা বাংগালী নয়।
রিক্সা:
সুযোগ পেলে কোলকাতার
হাতে টানা
রিক্সায় অবশ্যই
উঠবেন।
এটা মোটেও
অমানবিক নয়। সেটা
ওঠার পর
বুঝলাম।
ঠেলা গাড়িতে
এরচেয়ে বেশি
ভাড়ি জিনিস
টানতে হয়
কম মুজুরিতে। উঠতে
একটু ভয়ও
লাগে।
অনেক উচু
আর হাতে
টানা বলে
দোলে খুব
বেশি।
বিরলা প্লানেটোরিয়াম:
প্লানেটোরিয়াম মানেই যেখানে
গ্রহ নক্ষত্র
দেখাবে।
অনেকটা আমাদের
দেশের নভোথিয়েটারের
মতোন।
তবে তুলনামূলকভাবে
ছোট।
ভিতরের চারপাশে
ফটো গ্যালেরী। মাঝখানে
প্যালনেটোরিয়াম। আমরা বসলাম পূর্বদিকের
চেয়ারগুলিতে। পরে বুঝতে পেরেছিলাম
এই সিদ্ধান্ত
ভুল ছিল। কারন
মাঝখানের বিশাল
মেশিন যেটাতে
গ্রহ নক্ষত্রগুলো
দেখাচ্ছিল সেটার কারনে পশ্চিম আকাশ
দেখা যাচ্ছিল
না।
আর সব
গ্রহ এবং
যা যা
দেখাচ্ছিল সব পশ্চিম আকাশে।
যে বয়স্ক
মহিলা সব
বর্ননা করছিলেন,
তিনি খুব
রাগি।
কারো ফোন
যদি ভুলেও
বেজে ওঠে
তো কথা
থামিয়ে আগে
লোক পাঠান
সেই কালপ্রিটকে
ধরার জন্য। পরে
বাকি কাজ।
প্লানেটেরিয়ামর বর্ননা শুরু
হয়েছিল সূর্য
ডোবার পর
থেকে।
তারপর সন্ধ্যা,
এরপর রাত,
এরপর মাঝরাত। চারিদিক
শান্ত, একদম
ঘুটঘুটে অন্ধকার,
মধ্যরাত বলে
কথা।
আমার কোলে
ছিল শাফিন। মাঝরাতের
পরিবেশে গভির
ঘুমে ঘুমিয়ে
পড়ল।
পাতাল রেল:
এই জিনিস আমরা
ঢাকাবাসীর জন্য নতুন। পুরো
কোলকাতা এপার
ওপার করা
যায় কয়েক
মিনিটে।
সিড়ি ভেংগে
নিচে নামলাম। টিকেট
কাউন্টার থেকে
টিকেট কেটে
প্লাটফরমে দাড়ালাম। সেখানে অপেক্ষার
জন্য খুবই
কম বসার
জায়গায়।
লেখা আছে
প্রতিবন্ধিদের জন্য। যদিও যারা
বসেছিলেন তাদের
শক্ত সামর্থই
মনে হলো। পরো
স্টেশন বেশ
পরিস্কার পরিচ্ছন্ন। একজনকে
জিগ্যেস করে
নিশ্চিত হয়ে
নিলাম কোন
পাশ দিয়ে
আমাদের ট্রেন
আসবে।
কারন আসার
পর খুব
অল্প সময়ে
আমাদের উঠতে
হবে।
না হলে
ট্রেনের দরজা
অটোমেটিকালি বন্ধ হয়ে যাবে।
ট্রেন এলো
উঠলাম।
বসের জায়গা
ছিলনা।
ছেলেকে কোলে
নিয়ে চলন্ত
ট্রেন সামলানো
আমার জন্য
একটু ঝামেলার
হয়ে গেল। কিন্তু
ও আর
কারো কাছে
যাবে না। শুনেছিলাম
কোলকাতা কেউ
কারো জন্য
জায়গা ছাড়েনা। সেটা
যে ভুল
একটু পর
বুঝলাম এক
ভদ্রলোক উঠে
আমাকে বসতে
দিলেন।
একটু পর
আমার পাশের
জন উঠে
গেলেন।
ফয়সাল দুরে
থাকা সত্ত্বেও
সামনের লোক
না বসে
ফয়সালকে ডাকে
আমার পাশে
বসালেন।
শাফিনের সাথে
আলাপ জমানোর
চেষ্টা করলেন। কোন
কারনে আমার
ছেলে অপরিচিত
লোকের আলাপে
পাত্তা দিল
না।
এখানে কোন
ফেরিওয়ালা বা ফকির। আসলে
পুরো কলকাতাতেই
ঢাকার মতোন
এতো ফকির
দেখিনি।
আলীপুর চিড়িয়াখানা:
আমার আম্মা ছোট বেলায় গল্প করতেন, বহুদিন আগে আমার নানা একবার কোলকাতায় গিয়েছিলেন। সেখানে চিড়িয়াখানা দেখে তিনি খুবই মুগ্ধ হয়েছিলেন। বলেছিলেন ভালকরে দেখতে ৩ দিন লাগবে। এবার নিজে ঘুরে আমি বুঝলাম, তিনি তার ছেলেমেয়েদের তাক লাগিয়ে দেবার জন্য হয়তো একটু বেশি করেই বলেছিলেন, কারন আয়তনে আমার মনে হলো এটা ঢাকার চিড়িয়া খানার চেয়ে ছোট। তবে দেখতে অনেক সুন্দর। পার্কের মতোন।
ট্যাক্সিওয়ালা বুঝতে পেরেছিল আমরা জায়গা চিনিনা, তাই মন ভরে বেশি টাকা আদায় করলো। ঢোকার মুখে এক ফেরিওয়ালা বলল, অনেক রোদ, বাচ্চা কষ্ট পাবে, একটা বাশের টুপি নিয়ে নিন। একটা নিলাম, সেটা অনেক কাজে দিয়েছিল। আর কোয়ালিটি এতো ভাল যে এখনও আস্ত আছে।
এখানে ভারতের অন্য প্রদেশের বিশেষ করে আসামের দিকের অনেক লোককে বেড়াতে আসতে দেখলাম। অনেক খাচাতেই কাজ চলছে। বাঘের খাচা দেখে নিরাশ হলাম। পাখির কালেকশন বেশ ভাল। আর বেশ হরিণ তো রিতিমতোন ছাড়াই ঘুরছে। নিজেদের বাউন্ডারির ভিতরে।
একটা স্কুল থেকেও অনেক টিচাররা এসেছিলেন। তারা সাদা হরিনকে দুর থেকে সাদা বাছুর বলে গন্য করলেন এবং কাছে আর আসলেন না। একটা কালো ভালুক তো বাউন্ডারির খুব কাছে এসে সবাইকে ছবি তোলার জন্য পোজ দিল। জিরাফ গুলোও খুব কাছ থেকে ঘোরাঘুরি করছিল।
অনেক রকম বানর দেখলাম। চিড়িখানার বাইরে এক ফেরিওয়ালা ফয়সালকে ভুলিয়ে ভালিয়ে এক প্যাকেট বাদাম ধরিয়ে দিয়েছিল বানরকে দেবার জন্য। এখানে দেখলাম খাওয়ানো মানা, সেটাই স্বাভাবিক। তাই সেগুলো ফেলে দিতে হয়েছিল।
চিড়িয়াখানার লেক আর লেকের উপর ছোট ছোট পুলগুলো খুব সুন্দর। এখানে প্রথম কোয়ালিটি ওয়ালস এর আইসক্রিম খেলাম। খেতে খুবই মজা।
চিড়িয়াখানা যা দেখ আমার ছেলে খুব খুশি হলো সেটা হলো কাক। খাবার জায়গার পাশে সারি বেধে বসে থাকে। শাফিন মনের আনন্দে ছুটে ছুটে সেগুলো উড়াল। একবার তো একলোকের পায়ের নিচে পরে গেল। ঔ লোকের হাতে আবার একটা বাচ্চা ছিল। সে নিচে দেখতে পায়নি। ফয়সাল কিছু বলার আগেই ওনার বউ ওনাকে এমনভাবে ধমক দিল যে আমাদের আর কিছু বলতে হয়নি।
শাফিন প্রথম এখানে একটা পাখির নাম শিখলো, কাকাতুয়া।
নিকো পার্ক:
যারা বাংলাদেশের ফ্যান্টাসি কিংডম বা নন্দন থিম পার্কে অথবা হেরিটেজ পার্কে গিয়েছেন, তাদের এখানে বেড়াতে না আশাই ভাল। কারন এখানে নতুন কিছু নেই। তবে যা আছে, সেটা সুন্দর। ভাল লেগেছে ক্যাবল কার। তবে পাহাড়ে উঠতে উঠতে খবর হয়েগিয়েছিল। আর টিকিট না কেটে উপরে উঠলে আপনাকে নিচে নেমে টিকেট নিয়ে আবার উঠতে হবে।
খাবার পানির ফিলটার আছে। আর আইসক্রীম তো খুবই মজার।
এখানকার ওয়াটার ওয়ার্লডের পানি খুব ঠান্ডা। শাফিনতো শীতে ঠক ঠক করে কাপছিল। তাই পানিতে বেশিক্ষন থাকিনি। তবে পানি পরিস্কার। বাংলাদেশের থিম পার্ক গুলোর পানির মতোন নোংড়া না।
আর এই পার্কে বাংলাদেশের চাইতে খরচ বেশি পড়বে।
বাস:
কোলকাতায় ঢাকার মতোন
লাক্সারি বাস
তেমন একটা
চোখে পড়েনি। আর
রাস্তা ঘাটেও
এমন গাড়ির
ভিড় নেই। খুবই
পুরানো আমলের
বেশ কিছু
বাস চোখে
পড়েছে, যাদের
মেরামত করে
মোটামুটি ভাল
হালেই রাখা
হয়েছে।
এদেশের ভাল
বাসগুলো কাচটাচ
ভেংগে চলাচল
করে।
ড্রাগ:
পৃথিবীর কমবেশি সবদেশেই ড্রাগের
সমস্যা আছে। তবে এতটা প্রকাশে আশা করিনি। কোলকাতার সদর স্ট্রিট থেকে নিউমার্কেটে যেতে
একটা স্কুল আছে। তার পাশেই একদিন দিনে দুপুরে দেখলাম কয়েকজন দিন মুজুর শ্রেনীর লোক
ফুটপাতে বসে গোল হয়ে হাতে ইনজেকশন নিচ্ছে। স্কুলের ছোট ছোট বাচ্চাদের কাছের পরিবেশ
দেখে রিতিমতোন ভয় পেয়েছি।
শরবত:
কোলকাতায় যাওয়ার আগেই
শুনেছি সেখানকার
বিখ্যাত শরবত
বা ফলের
জুসের কথা। রাস্তাঘাটে
সবজায়গায়ই লেবুর জুস পাওয়া যায়। পরে
শুনেছিলাম পানিটা হয়তো ভাল দেয়না। তারপরও
প্রচুর খেয়েছি। খেতে
খুবই মজার। এছাড়া
মালটার রসও
দোকান থেকে
খেয়েছি।
চোখের সামনেই
সরাসরি বানিয়ে
দেয়.।
ভেজাল নেই। খেতেও
দারুন।
খাবার:
কোলকাতায় প্রথম পানিপুরি
খেয়েছি আমরা। ফুটপাতে। ভিক্টোরিয়া
মেমোরিয়ালের পাশে ফুটপাতে বিক্রি করছিল। প্রথমে
হাতে একটা
ছোট কাঠাল
পাতের বাটি
ধরিয়ে দিল। তারপর
একটা একটা
করে ফুচকার
ভিতরে অল্প
চটপটি আর
বেশি তেতুলের
রস ভরে
দিতে থাকল। একটা
শেষ করলে
আরেকটা।
খেতে ভালই। বিশেষ
করে যারা
ঝাল পছন্দ
করেন তাদের
খেতে খুবই
ভাল লাগবে।
কে এফ সি:
নিউমার্কেটের পিছনের দিকে আছে।
ওখানকার আইটেম
বাংলাদেশের আইটেমের সাথে সব মিলে
না।
আর দামও
তুলনামূলক ভাবে কম। শাফিনকে
ওরা খুশি
হয়ে একটা
লাল বেলুন
দিয়েছিল।
ম্যাকডোলান্ড: আমাদের দেশে
এখনও কেন
আসেনি কে
জানে।
কোলকাতার কলেজ
স্ট্রিটে আছে। এখানে
কম দামি
খাবারও আছে।
তবে কিপটামি না করে একটু
ভাল খাওয়াই
উচিত।
কারন কমদামি
গুলো খেতে
তেমন ভাল
না।
শাফিন এখান
থেকেও কি
যেন বাগিয়েছিল।
সাউথ ইন্ডিয়ন ফুড:
কোলকাতায় বা
ভারতের যে
কোন এলাকায়
এদের খাবারের
দোকান আছে। আমি
তো মালয়েশিয়ায়ও
এদের খাবার
খেয়েছি।
যাই হোক,
কোন সাউথ
ইন্ডিয়ান রেস্টুরেন্টে
গেলে এদের
লানচ ডিসটা
খেয়েদেখতে পারেন। অনেক রকমের
তরকারি আলাদা
বাটিতে গোল
করে বড়
ডিসে সাজিয়ে
দিবে, আর
মাঝখানে দিবে
ভাত।
লুচি বা
পাপড়িও দেয়। নানান
তরকারীর মধ্যে,
ডাল, খিচুরি,
আচার, দই
ইত্যাদি থাকবে। সব্জিও।
আপনি যদি নিউমার্কেটের
আসে পাশের
এলাকায় থাকেন
তো আজানের
শব্দও শুনতে
পাবেন।
আর পাবেন
প্রচুর বাংলাদেশি
খাবারের দোকান। যেমন
খুশবু, এমনি
আরও অনেক।
সবশেষে বলব, কোথাও বেড়াতে গেলে কোন প্যাকেজ টুরে যাবেন না। তাহলে অল্প সময়ে কোন কিছুই ঠিক মতোন দেখতে পাবেন না, ভাল খাবার খেতে পারবে না, আর রাখবেও বাজে হোটেলে। একটু খোজ নিয়ে নিজেই যান, টুরিস্টদের সব দেশের লোকই সাহায্য করে। কোন সমস্যা হবে না।