Shafeen took his mom's picture |
আমি বড়ই নিড়িহ নির্বিবাদী মানুষ। ইহা বুঝিতে কাহারও সময় লাগে না। অল্প সময়ের মধ্যেই সকলে বুঝিয়া ফেলে, এই কন্যা প্রতিশোধ নিবে না, কাহারো কাছে অভিযোগ করিবে না (এমন কি আল্লাহর কাছেও না), কাহারো কানে গিয়া লাগাইবে না। সুতরাং ইহার সহিত যেরূপ মন চাই সেরূপ ব্যবহার করা যায়। কোন রকম অসুবিধায় পরার সম্ভাবনা নেই।
আমার আম্মা প্রচন্ড রাগী একজন মানুষ। যে কোন বিষয়ে রাগ হইলে, তিনি আমার উপর ঝারিতেন। আমি বিনা বাক্য ব্যয়ে মানিয়া লইতাম। মাঝে মাঝে আব্বা বিরক্ত হইয়া বলিতেন, যখন মার খাস, দৌড়াইয়া পলাইয়া যাস না কেন? কি করিয়া বলি, আমি পলাইলে আম্মার খারাপ লাগিবে।
বড় হইবার পরও পরিস্থিতি একই রকম রহিল। লোকে আমার কাজ নিজের বলিয়া নির্র্দিধায় চলিতে লাগিল, আমি কিছুই বলিলাম না। আমি অন্যের উপকার করিয়া যাইতে লাগিলাম, কখনও নিজের কথা ভাবিলাম না। ফলে যাহারা উপকার পাইল, তাহাদের কেহ কেহ যাইবার পুর্বে আমাকে ধাক্কা ফেলিয়া যাওয়াতে কোন রকম লজ্জা বোধ করিল না, আর আমিও কাহাকে কিছু বলিলাম না।
যে কাহাকেও ঠকায় না, বা ঠকাইতে পারেনা, সেও আমাকে ঠকাইয়া মজা পায়, আহা এমন বোকা সরল লোক আর পাওয়া যাইবে না, এই বেলা ঠকাইয়া সুবিধা লইয়া লই।
মানুষ শুধু না, এখন দেখি পশু-পাখি কীট-পতংগেরও ইহা জানা হইয়া গিয়াছে। চড়ুই পাখিকে হুস হুস বলিয়া ভয় দেখাইলেও উড়িয়া যায় না, জানে এই কন্যার কাহারও ক্ষতি করিবার ক্ষমতা নাই। কাক তো দেখিবা মাত্র নিশানা ঠিক করে, কিছু একটা মাথার উপর ফেলিবার জন্য। এখনও সুবিধা করিয়া উঠিতে পারে নাই।
গতকাল দেখিলাম, কয়েকটি নেংটি ইদুর ঘরের মধ্য ছুটাছুটি করিতেছে, আমি যে দাড়াইয়া আছি, তাহাতে তাহদের খোশ গল্পের কোন রকম অসুবিধা হইতেছে না। পিপড়াদের পায়ের স্যান্ডেলের শব্দ করিয়া ভয় দেখাইবার চেষ্টা করিয়াছি, কিন্তু তিল পরিমান ভয় পায় নাই। উল্টা পায়ে উঠিবার চেষ্টা করিয়াছে। বুঝিনা, নিরিহ মানুষকে সবাই হয়রান কেন করে, মনে রাখিও, জগতে নিরিহ মানুষ আছে বলিয়াই তোমরা এতো সুখে যাহা খুশি তাহা করিয়া বেড়াইতে পার।
No comments:
Post a Comment