Play ground st Euro Garden Restaurant, Mouchak |
নিজের সমস্যা সমাধান করতে যে হিমশিম খায় সে ছেলের সমস্যা কিভাবে সমাধান করবে। কথাটা নিজেকে বলছি। আজ স্কুল ছুটির পর শাফিনের (আমার ৪ বছর ১১ মাসের ছেলে) বন্ধু এসে তার মাকে বলছে, শাফিন আমাকে মেরেছে। (বলুন তো কেমন লাগে শুনতে) আমি ওকে বললাম, কেন মেরেছে? ও কোন উত্তর দিলোনা। ছেলের জন্য অপেক্ষা করতে লাগলাম। ছেলে বেশ দেরিতে আসলো কাদতে কাদতে। আমি জরিয়ে ধরে শান্ত করে জিগ্যেস করলাম, কি হয়েছে? বলল, ক্লাসের একটি ছেলে গালে খামচি দিয়েছে। দেখলাম দুই গালে হালকা আচড়ের দাগ, অল্প লাল হয়ে আছে। এরই মধ্যে সেই ছেলে হাউ মাউ করে কাদতে কাদতে হাজির। বলল, শাফিন আমাকে মেরেছে। (আমি বুঝতে পারছিলাম না ঠিক কোন কাজটা আগে করা দরকার) আমি ওকেও বললাম, কেন শাফিন মেরেছে তোমাকে (নিজের ছেলের হাত ধরে ছিলাম, ওর কাছ থেকে পুরো ব্যাপার জানার আগে কিছু বলা সম্ভব না)? ও বলল, আমি কিছু করিনি। শাফিন সাথে সাথে প্রতিবাদ করলো, না, তুমি গালে ব্যাথা দেয়ার পর আমি মেরেছি। (কি অবস্থা বোঝেন) ছেলের বাবা ছেলে নানা ভাবে বুঝিয়ে নিয়ে আসলো, বলল, তোমরা হাত ধরে আবার বন্ধু হয়ে যাও। ঐ ছেলেও কাদতে লাগল, শাফিনও মুখ ব্যাজার করে অন্য দিকে তাকিয়ে রইলো। বুঝলাম, ছেলে বোঝাতে আরও সময় দিতে হবে। তাই ছেলের বাবাকে শুধু বললাম, আজ হাত মেলানো হবে না। ওরা চলে গেল, শাফিন দৌড় দিলো খেলতে। ওখান থেকে দৌড়ে আবার আমার কাছে আসার সময় এক সিনিয়র মেয়ের সাথে ঢাক্কা লাগল, সে আরেকটু সরিয়ে দিতে গিয়ে শাফিনকে ফেলে দিলো। এবার আমার মহারাজ সজোরে কেদে ফেলল। গিয়ে দেখি, হাত ছিলে রক্ত পড়ছে, বলল, বেশ ব্যাথা পেয়েছে। আমি ওকে সামলে বাড়ির পথে রওনা দিলাম, আর ছোট ছোট প্রশ্ন করে পুরো ঘটনা শুনে নিলাম। পথে আর বাড়ি ফিরে ব্যান্ডেজ লাগাতে লাগাতে ছেলের সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করলাম। ঘটনা যা বুঝলাম তা হলো...
শাফিনের বন্ধু ওর পাশে বসা অন্য একটি ছেলে নানা ভাবে বিরক্ত করছিল। শাফিন সেখানে মাতবরি করে বন্ধুকে মেরেছে। আমি বললাম, এটা খুবই খারাপ কাজ করেছো। আর কখনও মারবে না। যার যেখানে যা খুশি করুক, তুমি ওখানে কিছু বলবে না, ওখানে যাবে না, এটা তোমার বিষয় না (এই মুহুর্তের জন্য এটাই সমাধান)।
আর ছুটির পর বের হবার সময় শাফিনে সবার আগে বের হবার চেষ্টা করছিলো। কিন্তু ক্লাসের অন্য ছেলে ওর ব্যাগ সরানোর চেষ্টা করছিল, তাই সে ধাক্কা দিয়েছে। এরপর সেই ছেলে সিনিয়র ছেলেদের কাছে নালিশ করে, ওদের দিয়ে শাফিনকে ঢাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়েছে, আর পিছন থেকে এসে গালে ব্যাথা দিয়েছে। শাফিন সেটা দেখে ঐ ছেলেকে আবার মেরেছে। (বুঝেন অবস্থা)।
আমি শাফিনকে বললাম, দেখো, ভিড়ে কখনও ঢাক্কাঢাক্কি করবেনা। এটা খারাপ। যে কেউ ব্যাথা পাবে। তোমার সবার আগে যাওয়ার দরকার নেই। যত দেরিই হোক না কেন, তোমার মা বাইরে দাড়িয়ে তোমার অপেক্ষা করবে। আর যেহেতু ওর সাথে তোমার একবার মারামারি হয়েছে, এখন কিছুদিন ওর থেকে দুরে থাকবে, আমি চাইনা তোমরা আবার মারামারি করো। ছেলে মেনে নিল। আশা করি এসব নিয়ে আর কোন সমস্যা হবে না। একদিনে বেশি আর বললাম না, না হলে ছেলে হয়তো কোনটাই শুনবে না।
No comments:
Post a Comment